
ডিপিএড বাংলা অ্যাসাইমেন্ট, ডিপিএড অ্যাসাইমেন্ট, বাংলা অ্যাসাইমেন্ট, পিটিআই বাংলা অ্যাসাইমেন্ট, অ্যাসাইমেন্ট, ডিপিএড বাংলা এ্যাসাইমেন্ট, বাংলা এ্যাসাইমেন্ট, এ্যাসাইমেন্ট
শিরোনাম: প্রাথমিক স্তরে ছোট গল্পের প্রয়োজনীয়তা ( নমুনা)
ভুমিকা: গল্পের বই পড়তে কে না পছন্দ করে? বড় থেকে ছোট সবাই গল্পের বইয়ের প্রতি এতটাই দূর্বল থাকে যে, যেখানেই গল্পের বই পাওয়া যায় সেই বইটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করে দেয়। আর সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেমন যেন অসম্পূর্ণ বোধ হতে থাকে। বই মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে আর যোগায় মনের খোড়াক। ছোট শিশুদের বইগুলো বেশ অন্যরকম থাকে।
অনেক রঙিন আর সুন্দর সব ছবির মাঝে অল্প কিছু কথা দিয়ে থাকে গল্পগুলো। যেন তারা ছবি দেখেই কল্পনার রাজ্যের পাখা মেলতে পারে।
ছোট শিশুদের নিজেদের আলাদা এক জগত আছে। যেখানে অনেকগুলো চরিত্র থাকে। খেয়াল করে দেখবেন ওদের হাতের সামনে খেলনাজাতীয় কিছু থাকলেই সেটা দিয়ে তারা নিজেরাই গল্প করছে। যদি কখনও তাদের গল্পটা আড়ি পেতে শোনেন, আপনি ভাবতেও পারবেন না ওরা এতটা সুন্দর আর মজাদার সব গল্প বানাতে পারে। এমন সব মজাদার যুক্তি আর কথা বলবে যে আপনি আড়াল থেকেই হেসে কুটিকুটি হবেন।
শিশুদের সাথে গল্পের বই তৈরির কাজ করতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকবার হয়েছে। শিশুদের গল্প হয় যুক্তিহীন আর কল্পনায় মেশানো। বাস্তবতার সাথে সেটিকে মেলাতে গেলে বা সেটিকে বাস্তবধর্মী করতে যাওয়ার চেষ্টা করতে গেলেও সেটি শিশুর প্রতি অন্যায়।
বাচ্চাদের চিন্তা ভাবনা হয় একটু অন্য রকমের। তারা তাদের আশেপাশের অবস্থাকে নিজের মত করে আপন করে নেয় খুব সহজে। নেতিবাচক কোন কিছু তাদের কোমল মনে ভর করতে পারে না। সেই সহজ, প্রাঞ্জলতা ফুটে উঠে তাদের কথার মধ্যে দিয়ে, সাথে সাথে তাদের লিখনির মধ্যে দিয়েও।
আমাদের সবারই অনেকগুলো পছন্দের চরিত্র থাকে। সেগুলর মধ্যে ১/২ থাকে বেশী পছন্দের। আমরা দেখা যায়, অবচেতন মনে ঐ চরিত্রগুলোকে আমরা অনুসরণ করি বা তাদের মত করে অনেক কিছু কল্পনা করি যা কিনা বাস্তবের সাথে কোনই মিল থাকেনা। একবার ভাবুন, কল্পনার জগতটা কত সুন্দর এবং শক্তিশালী যে তার মায়া থেকে আমরা বড়রাও বের হয়ে আসতে পারি না।
গল্প লেখার মাধ্যমে বাচ্চাদের গঠনমূলক লেখার অভ্যাস গড়ে উঠে। ঐ গল্পগুলো শুনতে আমরা Kids Time চেষ্টা করেছি একটা জোন তৈরি করার। যেখানে কিনা বাচ্চারা তাদের মনের ভাবনা চিন্তাগুলোকে অনায়াসে প্রকাশ করতে পারে। তাদের কথা আগে শুনার চেষ্টা করা হয়। এরপর তাদের ভাবনাগুলোকে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়।
এভাবেই সে যখন বিভিন্ন গল্প তৈরি করতে থাকে, সাথে সাথে তার মধ্যে গুছিয়ে লেখার বা বলার দক্ষতা তৈরি হয়।
ছোট গল্প : ছোটগল্প (বিকল্প বানান ছোট গল্প) বাংলাই না সমগ্র কথাসাহিত্যের একটি বিশেষ রূপবন্ধ যা কাহিনীভিত্তিক এবং দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব, তবে ছোটগল্পের আকার কী হবে সে সম্পর্কে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেই। সব ছোটগল্পই গল্প বটে কিন্তু সব গল্পই ছোটগল্প নয়। একটি কাহিনী বা গল্পকে ছোটগল্পে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কিছু নান্দনিক ও শিল্পশর্ত পূরণ করতে হয়। ছোটগল্পের সংজ্ঞার্থ কী সে নিয়ে সাহিত্যিক বিতর্ক ব্যাপক। এককথায় বলা যায়- যা আকারে ছোট, প্রকারে গল্প তাকে ছোটগল্প বলে।
ছোটগল্পের সংজ্ঞায়ন ও বৈশিষ্ট্য :
ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্য :
ছোটগল্প লেখকের আত্ম-সচেতন সৃষ্টি। শেষ হয়েও হইল না শেষ, এই পংক্তিটির মধ্যে ছোটগল্পের মৌলিক বৈশিষ্ট্য ব্যঞ্জিত হয়েছে। এছাড়াও ছোটগল্পের নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষ্যণীয়।
ব্যঞ্জনধর্মিতা : সাধারণত কবিতার ক্ষেত্রে ব্যঞ্জনার ব্যাপারটি লক্ষ্যণীয় হলেও ছোটগল্পেও এর উজ্জ্বল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বর্ণনাভঙ্গির স্বতন্ত্র প্রয়োগের জন্যই কখনও কখনও ছোটগল্পের শব্দগুচ্ছ বা বাক্য তার অর্থকে ছাড়িয়ে গভীর ভাব-ব্যঞ্জনা মূর্ত করে তোলে।
সুসংবদ্ধতা : ছোট গল্পের ভাষা, চরিত্র ও ঘটনার বিন্যাস হয়ে থাকে সুসংবদ্ধ ও সুদৃঢ়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন ঘটনা ও চরিত্রের স্থান ছোটগল্পে একেবারেই থাকে না।
সংবেদনশীলতা : ছোটগল্প জীবনঘনিষ্ঠ শিল্পরূপ। এতে লেখকের সংবেদনশীল মানসিকতার
পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটে থাকে।
জীবনের খন্ড অংশ : ছোট গল্পের ক্যানভাসে মূর্তিত হয় বৃহৎ জীবন প্রবাহের একটি খন্ডিত
রসঘন মুহূর্ত। আর এ মুহূর্তটির বহমানতা হয়ে থাকে দ্রæত গতির
চরম মুহূর্ত : নাটকের তৃতীয় অংকে যেমন ঘটনার চরম উৎকর্ষ বা ঈষরসধী রূপ পায় ছোট
গল্পেও তেমনি একটি চরম মুহূর্ত লক্ষ্য করা যায়। এই পর্যায়ে পাঠকের ইন্দ্রিয় অত্যন্ত সক্রিয়
হয়ে পড়ে পরবর্তী পরিণতি জানার প্রত্যাশায়।
ব্যঞ্জনার অতৃপ্তি : এই বৈশিষ্ট্যটি দৃষ্টিগোচর হয় গল্পের শেষ পরিণতিতে। দৃশ্যত গল্পটি শেষ
হয়ে গেলেও পাঠকের মনে একটি অতৃপ্তিবোধ থেকেই যায়। এর পর কী হল, কী হতে পারেএই বিষয়ে পাঠক চিন্তিত হয়। ব¯ত্তত এটিই ছোট গল্পের সার্থক পরিণতি ও প্রধান বৈশিষ্ট্য।
ছোটগল্প পাঠদানের পদ্ধতি ও কলাকৌশল :
অর্থপূর্ণ শিখনের প্রধান ও পূর্বশর্ত হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক পাঠদান পদ্ধতি। অথার্ৎ শ্রেণীতে ছোটগল্প শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গল্পটির আলোকে যে শিখনফল বা আচরণিক উদ্দেশ্য নির্বাচন করা হয়ে থাকে তা শেখাতে হবে শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে কাজ করানোর মধ্য দিয়ে। শিখনফল অনুযায়ী এমন কাজের আয়োজন শ্রেণীতে রাখতে হবে- যেন ঐ কাজটি করতে গিয়ে শিক্ষার্থীকে চিন্তা করতে হয়; বারবার গল্পটির অংশবিশেষ পড়ে অনুধাবনের চেষ্টা করতে হয় এবং সমস্যা
সমাধানের জন্য দলীয় বা জোড়ায় চিন্তা সমন্বয়ের চেষ্টা চালাতে হয়। ছোট গল্প পাঠদানের
ক্ষেত্রে শ্রেণীতে শিক্ষককে কতকগুলো সাধারণ-ধাপ অনুসরণ করতে হয়। যেমন- লেখক
পরিচিতি, আদর্শ পাঠ, সরব পাঠ, শব্দার্থ, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রভৃতি।
(১) লেখক পরিচিতি : যে কোন ছোট গল্পের প্রথম অংশ পাঠদানের দিন শ্রেণীতে প্রথমে ঐ গল্পের লেখকের পরিচিতি বিবেচনায় আনতে হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষক লেখক পরিচিতি
সম্পর্কে ২/১ মিনিটের মিনি লেকচার দেবার পর শিক্ষার্থীদেরকে লেখক পরিচিতি অংশ পড়ে জোড়ায় জোড়ায় খাতায় তথ্যছক তৈরি করতে বলবেন। পরে ফলাবর্তন দিবেন।
(২) আদর্শ পাঠ : গল্পের নির্বাচিত অংশ শিক্ষক শ্রেণীমুখী হয়ে পঠনের আদর্শগত সকল দিক বিবেচনায় রেখে শিক্ষার্থীদেরকে পাঠ করে শোনাবেন। এসময় শিক্ষার্থীরা বই খুলে শিক্ষকের আদর্শ পাঠ অনুসরণ করবে।
(৩)সরব পাঠ : কয়েকজন আগ্রহী শিক্ষার্থী সরব পাঠ করবে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহায়তায় পাঠের ভুল সংশোধন করবেন।
(৪)শব্দার্থ শেখানো : শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে অর্থ- না- জানা শব্দগুলো পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করতে বলবেন এবং সাথে সাথে শুধু মূল শব্দগুলো বোর্ডের একপাশে নিচে নিচে লিখবেন। শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচিত শব্দগুলো বোর্ডে লিখা হয়ে গেলে ঐ
শব্দসমূহের অর্থ- শিক্ষার্থীদেরকে জোড়ায় চিন্তা করে নিজ নিজ খাতায় লিখতে বলবেন। পরে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ফলাবর্তন দিবেন।
(৫) পাঠ-বিশ্লেষণ : শিক্ষক এই অংশে প্রথমে খুব সংক্ষেপে (২/৩ মিনিট) পুরো পাঠের মূল দিকগুলো মৌখিকভাবে উপস্থাপন করবেন। এরপর তিনি শিক্ষার্থীদেরকে অংশগ্রহণমূলক শিখন পদ্ধতির সম্পূরক নিম্মরূপ কলাকৌশল ভিত্তিক কাজ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে তাকে পাঠের প্রকৃতির দিক বিবেচনায় রেখে কাজগুলো (এক বা
একাধিক) নির্বাচন করতে হবে।
সমস্যা সমাধান : শিক্ষার্থীদেরকে নির্ধারিত সমস্যার আলোকে চিন্তা করে দলীয় বা জোড়ায় সমাধান খুঁজে বের করতে বলা ও শ্রেণীতে দল/ জোড়ার পক্ষে উপস্থাপন
করতে বলা।
মাইন্ড ম্যাপিং : শিক্ষার্থীদেরকে পোস্টার পেপারে অথবা নিজ নিজ খাতায় পাঠের একটি মূল শব্দ লিখে এর চারপাশে তার সাথে সংশ্লিষ্ট শব্দগুলো লিখতে বলা।
ডড়ৎফং ভষধংয : শিক্ষার্থীদেরকে ধারাবাহিকভাবে পাঠের প্রধান শব্দগুলো দিয়ে পাঠের বিষয়ব¯ত্ত/তথ্য নির্ভর বাক্য গঠন করতে দেওয়া।
বৈষম্য অনুসন্ধান : শিক্ষার্থীদেরকে পাঠ সংশ্লিষ্ট দু’টি পরস্পর বিরোধী বিষয়ের তুলনা করে বিষয় দু’টির বিভিন্ন দিকের পার্থক্য নিরূপণ ও বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন
করতে বলা।
ব্রেইন স্টর্মিং : পাঠ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক গভীরভাবে চিন্তা করে ঐ দিকসমূহের প্রকৃত স্বরূপ অনুসন্ধান করতে বলা।
ভিজ্যুয়ালাইজেশন : শিক্ষার্থীদেরকে প্রথমে চোখ বন্ধ করে নির্দেশ মোতাবেক পাঠসংশ্লিষ্ট কিছু দৃশ্য স্মরণ করে পরে চোখ খুলে সঙ্গির সাথে মত বিনিময় করে উপস্থাপিত সমস্যার সমাধান নির্ধারণ করতে বলা।
চক বোর্ড সার-সংক্ষেপ : পুরো পাঠের মূল শব্দগুলো শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্বাচন করিয়ে সাথে সাথে পরিকল্পনামত ধারাবাহিকভাবে বোর্ডে লিখা।
তালিকা প্রস্তুত: পাঠের বিভিন্ন দিক-সংশ্লিষ্ট উপ-দিকগুলো তালিকা আকারে লিখতে বলা।
শ্রেণীকরণ : এলোমেলোভাবে মিশ্রিত অনেকগুলো তথ্যকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের আলোকে বিভিন্ন শ্রেণীতে সাজাতে বলা।
ত্রæটি শনাক্তকরণ: পাঠ-সংশ্লিষ্ট অথচ ভুল তথ্য সন্নিবেশিত সরবরাহকৃত অনুচ্ছেদ পড়ে তা সংশোধন করতে বলা। (পাঠ-1)