
আরিফুল ইসলাম,রাঙামাটি প্রতিনিধি:
পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের এক সময় কমিশনার বলে ডাকা হতো!
জেলা প্রশাসক যখন তার টয়লেট সারার জন্য বাথরুমের ছিলেন সেসময় তার মোবাইলের রিং আসলে সেই কল তার স্ত্রী রিসিভ করে এবং অপর দিক থেকে আওয়াজ আসে আপনি কে বলছেন? আমি কমিশনার বলছি, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে একটু কথা বলতে চাই।
জেলা প্রশাসকের স্ত্রী বাথরুমের বাইরে থেকে ডাক দিয়ে বললেন ওগো শুনছো কমিশনার ফোন করেছে, একথা শুনে জেলা প্রশাসক মহোদয় ভাবলেন বিভাগীয় কমিশনারের ফোন মনে হয়, অর্ধ টয়লেট অবস্থায় দ্রুত বের হয়ে স্ত্রীর হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে বললো, হ্যালো স্যার??
অপর দিক থেকে সালাম দিয়ে বলল আমি পৌরসভার ®নাম্বার ওয়ার্ডে কমিশনার বলছি স্যার।
জেলা প্রশাসক খুব রেগে গেলেন, বললেন শালারপুত রাখ্ আমি তো বিভাগীয় কমিশনারের ফোন মনে করে আধা টয়লেট থেকে বেরিয়ে গেছি, রাখ্!
পাশের বাড়ির ছোট ভাই একদিন আমাকে বলল দাদা আমাদের সকল ওয়ার্ডে পৌরসভার সদস্যদের কে কাউন্সিলর বলা হলেও আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বলা হয় কমিশনার, কেননা হালার পুত সকল কাজে কমিশন খায়! সেজন্যই কমিশনার আর কি!
এরকম পার্বত্য চট্টগ্রামেও অনেকগুলি কমিশন রয়েছে, যারা ওয়ার্ড কমিশনার হয়েও বিভাগীয় কমিশনারের মত ভাব দেখায় আর তা হলো সিএইচটি কমিশন। যাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আক্রমণাত্মক অনৈতিক মন্তব্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করছে, যার দরুন সেখানকার জননিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ও জিওসি মহোদয়ের দেয়া বক্তব্য নিয়ে সিএইচটি কমিশন একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা আছে পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী সরিয়ে নেয়াসহ এবং আর্মড পুলিশ স্থাপনে তারা বিশেষ উদ্ধেগ প্রকাশক করেছেন। যেটা চট্টগ্রামে শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের অন্যতম পরিপন্থী। পাহাড়ে যতো খুনের ঘটনা ঘটে সিএইচটি কমিশনে সুযোগ-সুবিধা ততো বেড়ে যায়।
সিএইচটি কমিশন হল মূলত জেএসএস এবং ইউপিডিএফ এর মত সন্ত্রাসী সংগঠনের পকেট কমিশন।
যারা জেএসএস এবং ইউপিডিএফ এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনকে খুনের বৈধতা দিয়ে চাঁদার ভাগ নেয়, তারা একবারও বুঝতে চেষ্টা করে না যে ওয়ার্ড কমিশনার আর বিভাগীয় কমিশনার একনয়। তারা ওয়ার্ড কমিশনার হয়ে বিভাগীয় কমিশনার এর মতো ভাব দেখায়। কি করে সাহস হয় সিএইচটি কমিশনের বুর্জোয়া সংস্থা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় এর বক্তব্য এবং একজন জিওসি মহোদয়ের বক্তব্যের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার।
শুধু তাই নয়! তারা স্বয়ং জাতিসংঘের দেয়া রিপোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলাদেশ তথা মন্ত্রণালয়ের দেয়া নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেই সিএইচটি কমিশনের রিপোর্টে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করেছে, যা বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থী।
সবাইকে বিনয়ের সাথে বলতে চাই যারা বাংলাদেশের এলিট দাবি করে নিজেদের জাহির করেন তাদের এই মাতলামির মাত্রা ও অতিরিক্ত কথাবাত্রা আন্তর্জাতিক মহলের জন্য খুবই হাস্যকর বলে বিবেচিত হয়েছে। কেননা তারা ঢাকায় বসে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অথচ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কিঞ্চিৎ পরিমাণ জ্ঞান তাদের নেই।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য শতকোটি টাকা ব্যায় করে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি শৃংখলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে শুধু পাহাড়ের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য। সেই জায়গায় এসে সিএইচটি কমিশন সন্ত্রাসীদের খুনের মদদ দিচ্ছে। তাদের এহেন হীন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অধিবাসীগণ।
তারা চাই সিএইচটি কমিশন জনস্বার্থে অচিরেই এই ধরনের আক্রমণাত্বক বক্তব্য থেকে ফিরে আসবে
অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।
ধারাবাহিক চলবে……
লেখকঃ
মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আখন্দ
কেন্দ্রীয়, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক
সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।