মহাপরিচালকের সফল নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসে আধুনিকতার ছোঁয়া

0
63

রাজীব প্রধান : বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস প্রথম ১৯৮২ সালে কার্যক্রম শুরু করে। মূলত এটি একটি জরুরী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ১৯৮১ সালের ৯ই এপ্রিল তৎকালীন ফায়ার সার্ভিস পরিদপ্তর ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে একীভূত হয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়।

পরবর্তীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন রেসকিউ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে অর্ন্তভুক্ত হয়। ফায়ার সার্ভিসের বর্তমান মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন, বিএসপি (বার),এনডিসি, পিএসসি, জি এম ফিল এর সফল নেতৃত্বে, দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের সেবাধর্মী কার্যক্রম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর যে কোনো দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় প্রথম সাড়াদানকারী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এ বিভাগের কর্মীরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে ।

ফায়ার সার্ভিসের বর্তমান মহাপরিচালকের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সফল চেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে বর্তমান সরকারের অধীনে নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী ঘোষণা বাস্তবায়নের কাজ চলমান রেখেছেন । ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক বাজেটের এই প্রকল্প বর্তমান সরকারের সময় অনুমোদন লাভ করায় এই বিভাগের কর্মীরা আরো বেশি উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত। দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ৬২ হাজার আরবান ভলান্টিয়ার তৈরির কার্যক্রম পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলছে।

ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক তৈরি হয়েছে। তাদের জন্য উদ্ধার সরঞ্জাম সংগ্রহের প্রক্রিয়াও গ্রহণ করা হয়েছে। বস্তির আগুন নির্বাপণের জন্য বস্তিবাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৯০০ স্বেচ্ছাসেবক। নৌ দুর্ঘটনায় ডুবুরি হিসেবে কাজ করার জন্য আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবকদের দেওয়া হয়েছে ডুবুরি প্রশিক্ষণ। আধুনিক সাজ-সরঞ্জামে পর্যায়ক্রমে সমৃদ্ধ হচ্ছে এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান ট্রেনিং কমপ্লেক্সকে যুগোপযোগী ট্রেনিং একাডেমিতে রূপান্তর এবং বৃহৎ পরিসরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিভাগের জন্য একটি বার্ন ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরিদর্শন কার্যক্রম এবং পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সুবিধার্থে পরিচালনা করা হচ্ছে ফায়ার লাইসেন্স মেলা। এসব উদ্যোগ অত্র অধিদপ্তরকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেয়ার নিরন্তর প্রয়াস। সেবার সামর্থ্য বাড়ানোর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ সম্মতিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিক উদ্যোগে এ বিভাগের সদস্যদের জীবন-মান উন্নত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অপারেশনাল কর্মীদের জন্য ঝুঁকিভাতা চালু, নন-ইউনিফর্ম কর্মীসহ সবার জন্য পূর্ণাঙ্গ রেশন সরবরাহ, দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি এবং বিভাগের প্রতিটি কর্মীর দীর্ঘদিনের দাবি খাকি পোশাক পরিবর্তন করে দুই রঙের নতুন পোশাক প্রবর্তন করা হয়েছে।

এসব বিষয় বাস্তবায়নের ফলে এ বিভাগের কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মনোবল বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভাগীয় কার্যক্রমে আশানুরূপ গতি সঞ্চারিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের বহুমুখী অগ্রগতি ও উন্নয়ন ধারাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশীর্বাদ হিসেবে গণ্য করছেন এবং এটিকে স্বর্ণযুগ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। এ বিভাগের কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে সর্বস্তরের জনসাধারণের সম্পৃক্ততা ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মো:মাইন উদ্দিন ।

একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ্য কর্ণধার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের দিকনির্দেশনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জন্য একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল ফ্রেমওয়ার্কে সংযুক্ত । এর মাধ্যমে অধিদপ্তরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এটি নতুন উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করবে। এ বিভাগের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ১৯৮২ সালে এর কার্যক্রম আরম্ভ করে। এদের মূল মন্ত্র হলো গতি, সেবা ও ত্যাগ।

এর অর্থ, দ্রুতগতিতে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে আর্ত মানুষের সেবা প্রদান করা এবং সেটি করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও পিছপা না হওয়া। প্রথম সাড়া প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে এ বিভাগের কর্মীরা আগুন নেভান। আগুন প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে এরা জনসাধারণকে প্রশিক্ষণও দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্তদের উদ্ধার, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ করে থাকেন।

উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে সব ধরনের প্রাকৃতিক ও মানবিক দুর্ঘটনার উদ্ধারকার্য সম্পাদন করেন থাকেন এই বিভাগটি।