কুড়িগ্রামে অভিনব বিয়ে কারাগারে বর

0
9

রাশিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রামঃ

কুড়িগ্রামে অভিনব কায়দায় বিয়ে করে বরকে কারাগারে পাঠালেন নববধূ। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে ব্যাপক কৌতুহল সৃষ্টি করেছে। সর্বত্র এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। পুলিশী গ্রেফতার-হয়রানির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বরের পরিবার। ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি ভূক্তভোগী পরিবারের দাবি। জানা গেছে, গত ২৩ মে ২১ইং জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা কেদার ইউনিয়নের সরকারটারী গ্রামের মৃত নুরুল হুদার কন্যা নিলুফা আক্তারের সাথে বিয়ে হয় আপন খালাতো ভাই আব্দুল হাকিমের। বিয়ের দু’দিন পর ২৫ মে ২১ইং বর ও তার দুলাভাই মোঃ বাবু প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী পথফিরানী (পাত্রীর বাবার বাড়িতে যায়)। সেখানে কনে মোছাঃ নিলুফা আক্তার তার চাচাতো ভাইয়ের বউ (ভাবীকে) বর দৌহিক সম্পর্কে শারীরিকভাবে সক্ষম নয় বলে জানায়। পরে বরের দুলাভাই মোঃ বাবু বিষয়টি মিমাংসার উদ্দেশ্যে কনের চাচার বাড়িতে বর-কনেকে নিয়ে একই ঘরে আবদ্ধ করে রাখে। পরে কনে নিজের স্বামীর সাথে শারীরিকভাবে সম্পর্ক স্থাপনে অপারগতা প্রকাশ করলে বর আব্দুল হাকিম ঘরের বাইরে থাকা দুলাভাইয়ের সহযোগিতা চাইলে তিনি ঘরের ভিতরে এসে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নানা পরামর্শ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে নববধূ নিলুফা আক্তার ঘর থেকে বের হয়ে এসে তাকে জোরপূর্বক দুলাভাই মোঃ বাবু মিয়া ধর্ষণ করেছে এবং স্বামী আব্দুল হাকিম ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে মর্মে পরিবারের সদস্যদেরকে অভিযোগ করে। এরই প্রেক্ষিতে কনে পক্ষের লোকজন বর এবং বরের দুলাভাইকে আটকে রেখে বরের দুলাভাইয়ের কাছে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দাবি করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুলাভাই বাবু মিয়া কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি অর্থনৈতিকভাবে সমাধান না হওয়ায় কনে পক্ষের লোকজন বর ও বরের দুলাভাইকে আসামী করে কচাকাটা থানায় মামলা দায়ের করেন এবং বরকে পুলিশে সোর্পদ করেন। যার মামলা নং-০৯। তাং-২৬/০৫/২০২১ইং। পরদিন ঘটনাটি জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয় । এ ব্যাপারে কনের বড় ভাই সেকেন্দার আলী অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কথিত ধর্ষণের ঘটনাটি রফাদফা না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং বলেন-বর ও বরের দুলাভাইকে আটকের পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনরুপ সাড়া না পাওয়ায় থানায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমি ন্যায় বিচার চাই। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরের পরিবারের কেউ বাসায় নেই। পুলিশী গ্রেফতার-হয়রানির ভয়ে সবাই পলাতক। মুঠোফোনে বরের বড় ভাই শহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন-পৃথিবীর ইতিহাসে স্বামীর সহযোগিতায় ধর্ষণের ঘটনাটি নজিরবিহীন। কারণ কোন স্বামী কাউকে দিয়ে তার বিবাহিত স্ত্রীর সম্ভ্রমহানিতে সহযোগিতা করতে পারে না। আমার ভাই ষড়যন্ত্রের শিকার। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করলে সত্য উদ্ঘাটন হবে। এ ব্যাপারে কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং বলেন- মামলার প্রধান আসামী আত্মগোপনে থাকা মোঃ বাবু মিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।