সময়েরপাতাঃ ঢাকার গুলশান-১ নম্বরের ডিসিসি মার্কেটে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার রাত আড়াইটায় মার্কেটটিতে আগুন লাগে। তবে আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ভোরের দিকে ধসে পড়েছে মার্কেটের একাংশ।
ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট সোমবার রাত থেকে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করলেও কতক্ষণে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে—তা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার সময়ও বলতে পারেননি অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক সকালে ঘটনাস্থলে এসে জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে কারও মৃত্যুর কোনো তথ্য তারা পাননি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ নাশকতার সন্দেহের কথা বললেও মেয়রের ধারণা, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকেই ওই মার্কেটে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের কমকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মুসতাক আহমেদ রাত পৌনে ৪টায় ঘটনাস্থলে মিডিয়াকে বলেন, ভয়াবহ আগুন লেগেছে। কীভাবে লেগেছে তা বলা যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার পলাশ চন্দ্র মদক জানান, প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয় মার্কেটের পূর্ব দিকে। পরে তা অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত আড়াইটার দিকে কাজ শুরু করে।
নিচতলায় পূর্ব অংশে রয়েছে কাঁচাবাজার। ওই দিকেই ডিসিসি মার্কেটের লাগোয়া চার তলা গুলশান শপিং সেন্টার। তবে সেখানে আগুন লাগেনি বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন।
গভীর রাতে কর্মচারীদের কাছ থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন মার্কেটে। তাদের অনেককেই মরিয়া হয়ে মালামাল সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। যাদের দোকান তখনও অক্ষত, তারা মালামাল নামিয়ে মার্কেটের সামনের খোলা অংশে জড়ো করতে থাকেন।
চোখের সামনে দোকান আর মার্কেট পুড়তে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ীদের কয়েকজন। এ ঘটনা নাশকতা বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ। এক দোকান মালিক বলেন, মার্কেটের এক নিরাপত্তারক্ষীর কাছে রাত ২টায় তিনি আগুন লাগার খবর পান। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ওই নিরাপত্তাকর্মী তাকে জানিয়েছেন।
দোকান মালিক সমিতির এক নেতাকে ফায়ার সার্ভিসের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। ভোর পৌনে ৫টার দিকে মার্কেটের একদল ব্যবসায়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উপর চড়াও হলে তারা সরে যান। প্রায় ১৫ মিনিট পর পানি নিয়ে নতুন করে আগুন নেভাতে শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, পানির স্বল্পতার কারণে তাদের বেড় পেতে হচ্ছে। পেছনের লেক থেকে পানি এনে কাজ চালাচ্ছেন তারা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, স্বাভাবিকভাবে মনে হয় বিদ্যুতের আগুন। এতে দাহ্য পণ্য, খাবার, পারফিউম… কোনো জীবনহানী হয়েছে বলে আমাদের জানা নাই। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশের ভবন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে চেষ্টাও তারা করছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে কত সময় লাগবে তা বলা সম্ভাব হচ্ছে না।