সময়ের পাতা ডেস্ক:
একাধিক বিয়ে, ভুয়া ঠিকানায় চাকরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ইস্রাফিল মিয়া নামে এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে।
জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে ১৪ বছর ধরে চাকুরীতে আছেন কারা অধিদপ্তরে। পরিচয় ও স্ত্রী সন্তানের তথ্য গোপন করে পরপর ৪টি বিয়ে করেছেন তিনি। চাকরিতে যোগদানের ২ বছরের ব্যবধানে তথ্য গোপন করে প্রথম স্ত্রীর অনুমোতি ছাড়াই করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। পেশাগত কারনে বিভিন্ন জেলায় বদলী হবার সুবাদে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে একেক জেলায় করেছেন একেকটা বিয়ে।
তবে কোন স্ত্রীর সাথেই স্থায়ী সংসার হয় না তার। কারো সাথে ৬ মাস আবার কারো সাথে ১ থেকে ২ বছর। অনুসন্ধানে জানা যায়, ই¯্রাফিল কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাইঘর গ্রামের জলফু মিয়ার পুত্র। শিক্ষা জীবনে ৮ম শ্রেণীর গন্ডি পেরোতে না পারলেও কৌশলে সুনামগঞ্জ জেলার জনৈক ব্যক্তির সার্টিফিকেট ও ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ২০০৮ সালের ১ আগস্ট ২৩তম ব্যাচের কারা কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তরে।
সম্প্রতি কারা অধিদপ্তর ও একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমে অনুসন্ধানী সংবাদে বেরিয়ে আসে তার অনিয়মের তথ্য। পরিচয় ও ভুয়া তথ্য দিয়ে চাকুরী করার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলী করা হয়েছে তাকে।
এদিকে তার বিয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, চাকুরীতে যোগদানের পর পারিবারিকভাবে স্থানীয় কুলসুমা নামে এক নারীর সাথে বিয়ের পিড়িতে বসেন ইস্রাফিল। ৯ বছরের মেয়ে ও ৭ বছরের এক ছেলে নিয়ে তার প্রথম স্ত্রীর সংসার এখনো বর্তমান। তবে প্রথম স্ত্রী রেখেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দ্বিতীয় ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধুলিয়াখাল জেলা কারাগার এলাকায় তৃতীয় এবং সর্বশেষ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কুতুবের চক গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর মিয়ার কন্যা নীপা খাতুনের সাথে চতুর্থ বিয়ের পীড়িতে বসেন ইস্রাফিল। পূর্বের স্ত্রী ও তার যাবতীয় তথ্য গোপন রাখতে কৌশলে ওই নারীকে শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমুহনায় খানঁ মার্কেটের আব্দুস সাত্তার নামে এক কাজীর কাছে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইস্রাফিলের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাবার পর মোবাইল বন্ধ করে রাখেন তিনি।
হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মোঃ জয়নাল আবেদীন ভূঞা জানান, ভুয়া তথ্য দিয়ে চাকুরীতে থাকায় তাকে সিলেটে বদলী করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ ওইখানেই তদন্ত হবে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন জানান, ইস্রাফিল ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চাকুরী করে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তদন্তে থাকায় অন্য আরো কয়েকজনের মত তার সার্ভিস বুক ডিআইজি অফিসে আছে। বিয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় ঝামেলা সমাধানের জন্য সে দুই দিয়ের সময় চেয়েছেন তিনি। ছাড়া কেউ তথ্য গোপন করে চাকরিতে প্রবেশ করলে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই বিষয়টি দেখবেন।
সিলেট বিভাগীয় কারা উপ মহাপরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) মো: কামাল হোসেন জানান, কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইস্রাফিলের বিষয়টি তদন্ত সহকারে দেখা হবে।