“কান্ট্রি ট্যুর, এ যেন এক স্বপ্নের নাম”

0
328

hstu6মুহিউদ্দিন নুর , দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ কান্ট্রি ট্যুর এমন এক ভ্রমন যেটাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্যই দ্বার উন্মোচিত থাকে তার নিজের প্রিয় মাতৃভূমি অর্থাৎ অপার পাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত বাংলাদেশ কে খুব কাছে থেকে নিবির ভাবে নতুন করে আবিষ্কার করার। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন কোন শিক্ষার্থী লেভেল-১,সেমিস্টার-১ এ ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করে তখনও সে অজ্ঞাত  থাকে কান্ট্রি ট্যুরের ব্যাপারে। তার চোখে মুখে থাকে নতুন কিছু স্বপ্ন। কিছুদিন পর সে যখন লেভেল-১,সেমিস্টার-২ এর শেষ পর্যায়ে পৌছায় তখন গন্ধ এবং স্বাদ পায় কান্ট্রি ট্যুর নামক এই স্বপ্নীল ভ্রমনের।ধীরে ধীরে বুঝতে পারে তার জন্য কি অপেক্ষা করছে।তার জন্য মুখ চেয়ে বসে আছে সমগ্র বাংলাদেশ অপলক চিত্তে নির্বিকার দৃষ্টিতে। এই কান্ট্রি ট্যুর এর ব্যায়ভারের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র আবাসন এবং যাতায়াত এর ব্যায়ভার বহন করে থাকে বাকি টা অর্থাৎ খাবার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যয়ভার শিক্ষার্থীকেই বহন করতে হয়। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের শেষ ১৫ দিন বরাদ্দ থাকে কান্ট্রি ট্যুরের জন্য। এই ১৫ টি বিশেষ দিন ৪ বা ৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় দিন,শিক্ষণীয় দিন।এই ট্যুরের মাঝেই প্রকৃত বন্ধুর দেখা মিলে;শিক্ষক গণের সাথেও তৈরি হয় বন্ধুত্বপূর্ণ মধুর এক পরিবেশের।উল্লেখ্য কান্ট্রি ট্যুর সবাই পায় তবে সেটা লেভেল-৩,সেমিস্টার-২ এর প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে। সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত সংশ্লিষ্ট অনুষদীয় ডীন মহোদয় গণ সমগ্র শিক্ষার্থীদের কে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত করেন এবং অনুষদীয় বিভাগ সংশ্লিষ্ট ২/৩/৪ জন শিক্ষককে প্রতিটি গ্রুপের ট্যুর গাইড হিসেবে দায়িত্বপ্রদান করে থাকেন। তাদের এই ট্যুরের অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ খুলনা বিভাগের -খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,খান জাহান আলী (রহঃ) এর মাজার শরীফ,ষাটগম্বুজ মসজিদ,পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন,মংলা সমুদ্র বন্দর,গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা কেন্দ্র,গম গবেষণা কেন্দ্র,পূর্বাঞ্চল সিলেটের-জাফলং,মাধবকুন্ডু জলপ্রপাত,শ্রী মঙ্গলের চা বাগান,লাউয়া ছরি রেইন ফরেস্ট,হবিগঞ্জ এর গ্যাস ক্ষেত্র,হযরত শাহজালাল (রহঃ) এবং শাহ পরাণ (রহঃ) এর মাজার শরীফ,শাবিপ্রবি,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ,দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল-চট্টগ্রামের-রাঙ্গামাটি,ফয়েজলেক,কাপ্তাই হ্রদ,ঝুলন্ত সেতু,খাগড়াছড়ি, বান্দরবান,কক্সেসবাজার,সেন্ট-মার্টিন দ্বীপ,মহেশ খালি দ্বীপ ভ্রমন করে থাকে।ভ্রমন শেষে তারা ঢাকা হয়ে হয়ে প্রত্যাবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের এবং বিভাগের শিক্ষার্থী গণ সব জটিলতা শেষে পৌছাতে পেরেছে তাদের সেই কাঙখিত সোপানের পাদদেশে। উপাচার্য না থাকায় স্থবিরতা দেখা দেয় এই কান্ট্রি ট্যুরের ক্ষেত্রেও।কিন্তু দীর্ঘ ৪ মাস পর নবনিযুক্ত উপাচার্য মহোদয় ড.এম.আবুল কাশেম সকল জটিলতার অবসান ঘটাতে সক্ষম হন।যার ফলশ্রুতিতে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের শুরুতেই নিজ নিজ অনুষদীয় রঙ্গিন টি-শার্ট গায়ে মেধাবী,তরুন হাবিপ্রবিয়ানেরা বেরিয়ে পরে বাংলাদেশকে আবিষ্কার করতে।তাদের রঙ্গীন টি-শার্ট আর সম্মিলিত পদচালনায় মুখোরিত হচ্ছে সমগ্র বাংলাদেশ। তারা যেখানেই রাখছে তাদের পদচিহ্ন সেখানেই তৈরি হচ্ছে একখন্ড হাবিপ্রবি। ওদের থামানো যাবেনা, ওদের দমানো যাবেনা। ওরা নির্ভীক ওরাই বিস্ময়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়- “থাকব নাক বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎ টাকে, কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে”

লিখাঃকে,এম,আতিকুর রহমান বাবর (এগ্রিকালচার,লেভেল -২,সেমিঃ-১)